২০১২-০৩-১৬
কাজটা দুঃসাধ্য। তবু অভূতপূর্ব দক্ষতার সাথে আওয়ামী লীগ সে অসাধ্য সাধন করেছে- তারা নিজের মাথায় নিজেই আঘাত করেছে। গত ১২ মার্চ বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট এবং গণতন্ত্রমনা আরো কায়েকটি দলের মহাসমাবেশ সম্বন্ধে অন্য কোনো রায় দেয়া সম্ভব নয়।
বিএনপি যদি সোমবার হরতাল ডাকত, সেটা এতটা সফল হতো কি না বলা কঠিন। কিন' শাসক দল আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে বিএনপিকে অভূতপূর্ব সাফল্য দিয়েছে। বিএনপি এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রসারিত মহা-মহাজোটের সমর্থকেরা মনে মনে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ দেবেন।
অথচ এ দিনের কর্মসূচি বানচাল করে দেয়ার ওপর আওয়ামী লীগ তাদের ভবিষ্যৎ বাজি রেখেছিল। তিন দিন আগে থেকে তারা ঢাকাকে অবরুদ্ধ দুর্গে পরিণত করেছিল। আশা করেছিল যে, সে দুর্গে চোখ বন্ধ করে বসে থেকে তারা এই বলে আত্মপ্রতারণা করবে যে, বিএনপি মহাসমাবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের গদি এখন নিরাপদ। আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমতের যেটুকু অবশিষ্ট ছিল শনি থেকে সোমবারের মধ্যে সেটা যে সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে চলে গেছে, শাসক দলের কোনো কোনো নেতা হয়তো এখনো সেটা বুঝে উঠতে পারেননি। বড় বড় কথা আর হুমকি-ধমকি দিয়ে তারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছেন, যেমন করে অন্ধকারের নিঃসঙ্গ পথিক ভয় কাটাতে শিস দেয়। বাংলাদেশের মানুষকে চিনতে অস্বীকার করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ বরাবরই স্বৈরতন্ত্রী দল ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে এসে সেটা সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা পেয়ে তিনি যে সশস্ত্র ক্যাডার গঠন করেন, তাদের ব্যবহার করা হয়েছিল বিএনপিকে বাকরোধ করার কাজে। বিএনপিকে তারা সভাসমাবেশের জন্য স'ান দেয়নি, রাজপথে বিএনপির মিছিলের ওপর অসংখ্যবার হামলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালে রাজধানীর মালিবাগে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা: ইকবালের নেতৃত্বে ক্যাডারেরা বিএনপির মিছিলে গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেছিল। আরো উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফা গদি পেয়ে শেখ হাসিনার সরকার ডা: ইকবাল ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় গদি পেয়ে আওয়ামী লীগ সশস্ত্র ক্যাডারদের সংখ্যা বহু গুণে বাড়িয়ে তুলেছে। এদের পোষা হচ্ছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ইত্যাদি আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলোর ছত্রছায়ায়। এবারে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে শুধু বিএনপিকে সভা-সমিতি আর মিছিল করা থেকে বঞ্চিত করাই নয়, বিএনপিসহ সব গণতান্ত্রিক প্রতিপক্ষকে সমূলে উচ্ছেদ করার কাজে। বিএনপিকে সভাসমাবেশ করার অনুমতি কিংবা স'ান দেয়া হয় না। দেয়া হলেও আওয়ামী লীগের ক্যাডারেরা একই সময়ে এবং একই স'ানে ভুয়া সভা, সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি ডেকে বসে। দলীয়কৃত প্রশাসন ‘ওপর-ওয়ালাদের’ নির্দেশমতো ‘শান্তি রক্ষার্থে’ ১৪৪ ধারা জারি করে বিএনপির সভা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিগত তিন বছরে এমন ঘটনা বাংলাদেশের সর্বত্র অহরহ ঘটছে।
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস'া ফিরিয়ে আনতে খালেদা জিয়ার আন্দোলনের সাফল্যে সরকার ভীত ও শঙ্কিত। রোডমার্চ করে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের মানসকন্যা খালেদা জিয়া সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামে গেছেন। লাখ লাখ লোক সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে তাকে হর্ষধ্বনি দিয়েছেন, পথসভাগুলোতে তার বক্তৃতা শুনেছেন বহু লক্ষ লোক, নির্ধারিত সভাগুলোতে কয়েক কোটি লোক এ যাবৎ তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে তার ভাষণে উৎসাহিত হয়েছেন। এসব সভায় নেত্রী একটাই দাবি করেছেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস'া ফিরিয়ে আনতে হবে। কোথাও যুদ্ধাপরাধীদের প্রসঙ্গ মুখেও আনেননি। অথচ আওয়ামী লীগের গোয়েবলস আর তাদের প্রচারযন্ত্রগুলো দিন-রাত প্রচার চালাচ্ছে যে, খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের ‘বিচার’ বন্ধ করতে আন্দোলন চালাচ্ছেন।
গণভীতিতে বুদ্ধি বিভ্রম
বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গেছে, তারা দেখছে এক দৃশ্য, কিন' আওয়ামী লীগ তাদের বোঝাতে চাইছে অন্য কিছু। এত দিন যারা দ্বিধাসঙ্কটে ভুগছিল, স্বাধীনতা আন্দোলনের দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতি যাদের কিছু সহানুভূতি অবশিষ্ট ছিল, তাদেরও এখন মোহভঙ্গ হয়েছে। তারা বুঝে গেছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ তাদের সাপের পাঁচ পা দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতারা জানতেন- অবাধে খালেদার ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ আন্দোলন চলতে দিলে কোটি মানুষ দেশের দূরদূরান্ত থেকে ঢাকায় আসত নেত্রীর মুখ থেকে কিছু আশার কথা শুনতে। জনতাকে এরা আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বমুখী চরম ব্যর্থতার কথা, এ সরকারের ফ্যাসিবাদী পরিকল্পনার কথা, বাংলাদেশকে আরেকটি সিকিম করার বিনিময়ে হাসিনার গদি চিরস'ায়ী করার কথা শুনতে দিতে চায়নি। জনতার প্রতি ভয় এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের বুকে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১২ মার্চের ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ আন্দোলন ব্যর্থ করে দেয়ার উন্মাদ সিদ্ধান্ত সে জন্যই তারা নিয়েছিল।
বাংলাদেশের মানুষের নাগরিক অধিকার, তাদের মানবিক অধিকারকে যে আওয়ামী লীগ কানাকড়ি মূল্য দেয় না, ১২ মার্চ সেটা প্রমাণিত হয়েছে। কিন' সে জন্য তাদের কী মূল্য দিতে হবে, তারা ভেবে দেখেনি। নইলে এই চোরাবালিতে তারা পা দিতো না।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। কোনো না কোনোভাবে প্রত্যেকটি নাগরিকের নাড়ি রাজধানীর সাথে গ্রথিত। কাজকর্মে লোকে রাজধানীতে থাকে। তারা এবং তাদের পরিবার-পরিজন আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করতে গ্রামের বাড়িতে যায়। কিন' আবার ঢাকায় ফিরে আসতে হয়। গ্রামীণ স্বাস'্যব্যবস'া নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার রাজনীতি করছে। হাজারে হাজারে দলীয় কর্মী ও ক্যাডারকে তারা স্বাস'্য বিভাগে চাকরি দিয়েছে, কী স্বাস'্যব্যবস'া তারা দেবে? অতএব, অসুখ হলেই ঢাকায় নিতে হয় রোগীকে। সব ধরনের ব্যবসায়-বাণিজ্যের, এমনকি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের ঘুষ দিতেও যেতে হয় ঢাকায়। প্রবাসী কর্মীদের কর্মস'লে ফিরে যাওয়ার বিমানও ছাড়ে ঢাকা থেকে।
শনি থেকে সোমবার- এই তিন দিন কোনো বাস, লঞ্চ এমনকি প্রাইভেট গাড়িও ঢাকায় আসতে দেয়া হয়নি। প্রবাসী কর্মীদের কতজন যথাসময়ে কাজে যেতে পারেননি বলে চাকরি খুইয়েছেন? চিকিৎসায় বিলম্ব হয়েছিল বলে কতজন হতভাগা প্রাণ হারিয়েছেন? তিন দিন অচল থাকা বাস, ট্রাক, লঞ্চগুলোর মালিকদের কত টাকা লোকসান হয়েছে? কত লোকসান দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা? কত মানুষ প্রতিদিন জেলাগুলো থেকে ঢাকায় আসেন?- তিন লাখ? পাঁচ লাখ? এক কোটি? নিজ দেশে অবাধে বিচরণ তাদের মানবিক অধিকার। সে অধিকারে হস্তক্ষেপ করে সরকার গুরুতর অপরাধ করেছে। ওপরে বর্ণিত তালিকার মানুষগুলোর আওয়ামী লীগ ও তাদের সরকারের ওপর ক্রুদ্ধ না হওয়ার কোনো কারণ আছে?
সরকার বিএনপির হরতাল সফল করে দিয়েছে
অবরুদ্ধ রাজধানীর অবরুদ্ধ মানুষের ভোগান্তিও কম হয়নি। গণপরিবহন চলেনি ঢাকায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা কাজকর্মে যেতে পারেননি। পায়ে হেঁটে যারা গিয়েছিলেন কষ্ট করে পায়ে হেঁটেই তাদের ফিরতে হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ ছিল। পরিবহন ব্যবসায়-বাণিজ্যের পূর্বশর্ত। সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশে পরিবহন বন্ধ ছিল বলে কত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের? রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ ছিল। এ সরকার শিক্ষাকে কেমন গুরুত্ব দেয় এই হচ্ছে তার নমুনা। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন বন্ধ রেখে, রাজধানীকে দুই টুকরো করে আওয়ামী লীগ সরকার নাগরিকদের সবাইকে ক্রুদ্ধ, অপমানিত করেছে। তার ওপর সোমবার যে অভিজ্ঞতা সাধারণ নাগরিকদের হয়েছে তার তিক্ত স্বাদ দীর্ঘকাল তাদের মুখে লেগে থাকবে, আওয়ামী লীগের কথা মনে করে তারা থুথু ফেলবেন।
ঢাকাকে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করার উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ১৯ দফা নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সরকারের জ্ঞাত বিরোধীদের গ্রেফতার, যানবাহন তল্লাশি আর বিরোধী দলের সমর্থকদের যানবাহন হুকুমদখল (রিকুইজিশন) করার নির্দেশ সেই ১৯ দফার মধ্যে পড়ে। রাজধানীতেও সে দিন জনসমাবেশ বন্ধ করার জন্য পুলিশকে বহু নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সমাবেশের আগের সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ সমাবেশের অনুমতি দিতে বিলম্ব করেছে, রোববারের রাত বেশ খানিকটা বেড়ে যাওয়ার আগে মঞ্চ তৈরি করতে দেয়া হয়নি, কতগুলো মাইক্রোফোন ব্যবহার করা যাবে তার সংখ্যা বেঁধে দেয়া হয়েছিল, এমনকি সমাবেশের লোক কোথায় দাঁড়াতে পারবে তারও একটা সীমারেখা বেঁধে দেয়া হয়েছিল।
‘অমৃত সায়রে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল’। আওয়ামী লীগের হয়েছে সে অবস'া। যতগুলো উদ্দেশ্যে তারা বিএনপির সমাবেশ বানচাল করতে চেয়েছিল তার প্রত্যেকটিরই হয়েছে উল্টো ফল। প্রকৃত প্রস্তাবে মাইক্রোফোনের অসুবিধা সত্ত্বেও খালেদা জিয়ার সমাবেশ আশাতিরিক্ত সফল হয়েছে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা আমাকে বলেছেন, প্রায় তিন লাখ লোক সমাবেশে এসেছিলেন, সভা শুরু হওয়ার অনেক আগেই পুলিশের নির্দিষ্ট সীমানা ছাড়িয়ে বহু দূরে ছড়িয়ে পড়েছিল সমাবেশ।
খালেদা জিয়ার চারটি রোডমার্চ, বহু পথসভা ও জনসভা এবং আরো পরে বিভিন্ন জেলায় তার জনসমাবেশে কোথাও অশান্তি হয়নি। সোমবারও বিএনপি ও বিরোধী ১৬ দলের জোটের জোট থেকে কোথাও অশান্তি ঘটেনি। কিছু অশান্তি ঘটিয়েছিল ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডারেরা। তারা সমাবেশমুখী ছোটখাটো দলের ওপর হামলা করেছে। শেখ হাসিনার এই বরপুত্রদেরই আবার সরকার পুলিশের ভূমিকায় ব্যবহার করেছে। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে লোকজনকে যানবাহন থেকে নামিয়ে এনেছে, তাদের দেহতল্লাশি করেছে।
বাক ও সংবাদের স্বাধীনতা হত্যা
লাখ পাউন্ড ব্যয়ে বিদেশে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে হাসিনা সরকার দাবি করেছে, বাংলাদেশে বাক ও সংবাদের স্বাধীনতা আদর্শস'ানীয়। কিন' এতকাল বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে অন্য ছবি। বিরোধী দলকে তারা সভা-সমিতি করতে দিতে নারাজ। সাংবাদিকদের ওপর বহু নির্যাতন হয়েছে। প্রায় এক ডজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বর্তমান সরকারের আমলে। খুনিরা অবশ্যই শাসক দলের কাছের মানুষ। নইলে এরা অবশ্যই ধরা পড়ত। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং রুনি-সাগর দম্পতির হত্যা তদন্তের ভার নিয়েছেন, সে কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অন্য হাজারো ব্যর্থতার মতো এখানেও প্রধানমন্ত্রী চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। খুনিরা ধরা পড়েনি। শোনা যাচ্ছে, দুই খুনিকে নিরাপদে আমেরিকায় চলে যেতে দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার সমাবেশের সরাসরি লাইভ সম্প্রচারের মধ্যেই একুশে টেলিভিশন, বাংলাভিশন ও ইসলামী টেলিভিশন চ্যানেল তিনটির সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বল্পবুদ্ধি নেতারা হয়তো নিজেদের ‘সাফল্যে’ বগল বাজাচ্ছেন। কিন' তারা ভুলে গেছেন যে, এই তিনটি চ্যানেলের লাখ লাখ দর্শক শা...বা... বলে সরকারকে গালি দিচ্ছেন, মনে মনে আওয়ামী লীগ নেতাদের মুণ্ডু চিবোচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষক দেশ ভারত ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি প্রীত হওয়ার মতো নয়। সোমবারের সমাবেশ সম্বন্ধে বিদেশী মিডিয়ার বিবরণ সে ভাবমূর্তিতে আরো কয়েক পোঁচ কালি লেপে দিয়েছে। লজ্জা-শরম বলে যদি কোনো কিছু এ সরকারের থেকে থাকে, তাহলে তাদের উচিত লম্বকর্ণ বিশিষ্ট একটি চতুষ্পদ জীবের মতো চিৎকার না করে সুস' মস্তিষ্কে বিএনপির ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচিতে নিজেদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা। খালেদা জিয়া ২৯ মার্চ হরতাল ডেকেছেন, তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার ঘোষণা না দিলে ১১ জুন আবার ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি মেনে নিলে নিজেদেরও অনেক কল্যাণ করবে।
(লন্ডন, ১৩.০৩.১২)
serajurrahman@btinternet.com
বিএনপি যদি সোমবার হরতাল ডাকত, সেটা এতটা সফল হতো কি না বলা কঠিন। কিন' শাসক দল আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে বিএনপিকে অভূতপূর্ব সাফল্য দিয়েছে। বিএনপি এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রসারিত মহা-মহাজোটের সমর্থকেরা মনে মনে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ দেবেন।
অথচ এ দিনের কর্মসূচি বানচাল করে দেয়ার ওপর আওয়ামী লীগ তাদের ভবিষ্যৎ বাজি রেখেছিল। তিন দিন আগে থেকে তারা ঢাকাকে অবরুদ্ধ দুর্গে পরিণত করেছিল। আশা করেছিল যে, সে দুর্গে চোখ বন্ধ করে বসে থেকে তারা এই বলে আত্মপ্রতারণা করবে যে, বিএনপি মহাসমাবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের গদি এখন নিরাপদ। আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমতের যেটুকু অবশিষ্ট ছিল শনি থেকে সোমবারের মধ্যে সেটা যে সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে চলে গেছে, শাসক দলের কোনো কোনো নেতা হয়তো এখনো সেটা বুঝে উঠতে পারেননি। বড় বড় কথা আর হুমকি-ধমকি দিয়ে তারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছেন, যেমন করে অন্ধকারের নিঃসঙ্গ পথিক ভয় কাটাতে শিস দেয়। বাংলাদেশের মানুষকে চিনতে অস্বীকার করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ বরাবরই স্বৈরতন্ত্রী দল ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে এসে সেটা সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা পেয়ে তিনি যে সশস্ত্র ক্যাডার গঠন করেন, তাদের ব্যবহার করা হয়েছিল বিএনপিকে বাকরোধ করার কাজে। বিএনপিকে তারা সভাসমাবেশের জন্য স'ান দেয়নি, রাজপথে বিএনপির মিছিলের ওপর অসংখ্যবার হামলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালে রাজধানীর মালিবাগে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা: ইকবালের নেতৃত্বে ক্যাডারেরা বিএনপির মিছিলে গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেছিল। আরো উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফা গদি পেয়ে শেখ হাসিনার সরকার ডা: ইকবাল ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় গদি পেয়ে আওয়ামী লীগ সশস্ত্র ক্যাডারদের সংখ্যা বহু গুণে বাড়িয়ে তুলেছে। এদের পোষা হচ্ছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ইত্যাদি আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলোর ছত্রছায়ায়। এবারে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে শুধু বিএনপিকে সভা-সমিতি আর মিছিল করা থেকে বঞ্চিত করাই নয়, বিএনপিসহ সব গণতান্ত্রিক প্রতিপক্ষকে সমূলে উচ্ছেদ করার কাজে। বিএনপিকে সভাসমাবেশ করার অনুমতি কিংবা স'ান দেয়া হয় না। দেয়া হলেও আওয়ামী লীগের ক্যাডারেরা একই সময়ে এবং একই স'ানে ভুয়া সভা, সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি ডেকে বসে। দলীয়কৃত প্রশাসন ‘ওপর-ওয়ালাদের’ নির্দেশমতো ‘শান্তি রক্ষার্থে’ ১৪৪ ধারা জারি করে বিএনপির সভা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিগত তিন বছরে এমন ঘটনা বাংলাদেশের সর্বত্র অহরহ ঘটছে।
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস'া ফিরিয়ে আনতে খালেদা জিয়ার আন্দোলনের সাফল্যে সরকার ভীত ও শঙ্কিত। রোডমার্চ করে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের মানসকন্যা খালেদা জিয়া সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামে গেছেন। লাখ লাখ লোক সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে তাকে হর্ষধ্বনি দিয়েছেন, পথসভাগুলোতে তার বক্তৃতা শুনেছেন বহু লক্ষ লোক, নির্ধারিত সভাগুলোতে কয়েক কোটি লোক এ যাবৎ তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে তার ভাষণে উৎসাহিত হয়েছেন। এসব সভায় নেত্রী একটাই দাবি করেছেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস'া ফিরিয়ে আনতে হবে। কোথাও যুদ্ধাপরাধীদের প্রসঙ্গ মুখেও আনেননি। অথচ আওয়ামী লীগের গোয়েবলস আর তাদের প্রচারযন্ত্রগুলো দিন-রাত প্রচার চালাচ্ছে যে, খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের ‘বিচার’ বন্ধ করতে আন্দোলন চালাচ্ছেন।
গণভীতিতে বুদ্ধি বিভ্রম
বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গেছে, তারা দেখছে এক দৃশ্য, কিন' আওয়ামী লীগ তাদের বোঝাতে চাইছে অন্য কিছু। এত দিন যারা দ্বিধাসঙ্কটে ভুগছিল, স্বাধীনতা আন্দোলনের দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতি যাদের কিছু সহানুভূতি অবশিষ্ট ছিল, তাদেরও এখন মোহভঙ্গ হয়েছে। তারা বুঝে গেছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ তাদের সাপের পাঁচ পা দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতারা জানতেন- অবাধে খালেদার ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ আন্দোলন চলতে দিলে কোটি মানুষ দেশের দূরদূরান্ত থেকে ঢাকায় আসত নেত্রীর মুখ থেকে কিছু আশার কথা শুনতে। জনতাকে এরা আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বমুখী চরম ব্যর্থতার কথা, এ সরকারের ফ্যাসিবাদী পরিকল্পনার কথা, বাংলাদেশকে আরেকটি সিকিম করার বিনিময়ে হাসিনার গদি চিরস'ায়ী করার কথা শুনতে দিতে চায়নি। জনতার প্রতি ভয় এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের বুকে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১২ মার্চের ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ আন্দোলন ব্যর্থ করে দেয়ার উন্মাদ সিদ্ধান্ত সে জন্যই তারা নিয়েছিল।
বাংলাদেশের মানুষের নাগরিক অধিকার, তাদের মানবিক অধিকারকে যে আওয়ামী লীগ কানাকড়ি মূল্য দেয় না, ১২ মার্চ সেটা প্রমাণিত হয়েছে। কিন' সে জন্য তাদের কী মূল্য দিতে হবে, তারা ভেবে দেখেনি। নইলে এই চোরাবালিতে তারা পা দিতো না।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। কোনো না কোনোভাবে প্রত্যেকটি নাগরিকের নাড়ি রাজধানীর সাথে গ্রথিত। কাজকর্মে লোকে রাজধানীতে থাকে। তারা এবং তাদের পরিবার-পরিজন আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করতে গ্রামের বাড়িতে যায়। কিন' আবার ঢাকায় ফিরে আসতে হয়। গ্রামীণ স্বাস'্যব্যবস'া নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার রাজনীতি করছে। হাজারে হাজারে দলীয় কর্মী ও ক্যাডারকে তারা স্বাস'্য বিভাগে চাকরি দিয়েছে, কী স্বাস'্যব্যবস'া তারা দেবে? অতএব, অসুখ হলেই ঢাকায় নিতে হয় রোগীকে। সব ধরনের ব্যবসায়-বাণিজ্যের, এমনকি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের ঘুষ দিতেও যেতে হয় ঢাকায়। প্রবাসী কর্মীদের কর্মস'লে ফিরে যাওয়ার বিমানও ছাড়ে ঢাকা থেকে।
শনি থেকে সোমবার- এই তিন দিন কোনো বাস, লঞ্চ এমনকি প্রাইভেট গাড়িও ঢাকায় আসতে দেয়া হয়নি। প্রবাসী কর্মীদের কতজন যথাসময়ে কাজে যেতে পারেননি বলে চাকরি খুইয়েছেন? চিকিৎসায় বিলম্ব হয়েছিল বলে কতজন হতভাগা প্রাণ হারিয়েছেন? তিন দিন অচল থাকা বাস, ট্রাক, লঞ্চগুলোর মালিকদের কত টাকা লোকসান হয়েছে? কত লোকসান দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা? কত মানুষ প্রতিদিন জেলাগুলো থেকে ঢাকায় আসেন?- তিন লাখ? পাঁচ লাখ? এক কোটি? নিজ দেশে অবাধে বিচরণ তাদের মানবিক অধিকার। সে অধিকারে হস্তক্ষেপ করে সরকার গুরুতর অপরাধ করেছে। ওপরে বর্ণিত তালিকার মানুষগুলোর আওয়ামী লীগ ও তাদের সরকারের ওপর ক্রুদ্ধ না হওয়ার কোনো কারণ আছে?
সরকার বিএনপির হরতাল সফল করে দিয়েছে
অবরুদ্ধ রাজধানীর অবরুদ্ধ মানুষের ভোগান্তিও কম হয়নি। গণপরিবহন চলেনি ঢাকায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা কাজকর্মে যেতে পারেননি। পায়ে হেঁটে যারা গিয়েছিলেন কষ্ট করে পায়ে হেঁটেই তাদের ফিরতে হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ ছিল। পরিবহন ব্যবসায়-বাণিজ্যের পূর্বশর্ত। সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশে পরিবহন বন্ধ ছিল বলে কত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের? রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ ছিল। এ সরকার শিক্ষাকে কেমন গুরুত্ব দেয় এই হচ্ছে তার নমুনা। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন বন্ধ রেখে, রাজধানীকে দুই টুকরো করে আওয়ামী লীগ সরকার নাগরিকদের সবাইকে ক্রুদ্ধ, অপমানিত করেছে। তার ওপর সোমবার যে অভিজ্ঞতা সাধারণ নাগরিকদের হয়েছে তার তিক্ত স্বাদ দীর্ঘকাল তাদের মুখে লেগে থাকবে, আওয়ামী লীগের কথা মনে করে তারা থুথু ফেলবেন।
ঢাকাকে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করার উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ১৯ দফা নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সরকারের জ্ঞাত বিরোধীদের গ্রেফতার, যানবাহন তল্লাশি আর বিরোধী দলের সমর্থকদের যানবাহন হুকুমদখল (রিকুইজিশন) করার নির্দেশ সেই ১৯ দফার মধ্যে পড়ে। রাজধানীতেও সে দিন জনসমাবেশ বন্ধ করার জন্য পুলিশকে বহু নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সমাবেশের আগের সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ সমাবেশের অনুমতি দিতে বিলম্ব করেছে, রোববারের রাত বেশ খানিকটা বেড়ে যাওয়ার আগে মঞ্চ তৈরি করতে দেয়া হয়নি, কতগুলো মাইক্রোফোন ব্যবহার করা যাবে তার সংখ্যা বেঁধে দেয়া হয়েছিল, এমনকি সমাবেশের লোক কোথায় দাঁড়াতে পারবে তারও একটা সীমারেখা বেঁধে দেয়া হয়েছিল।
‘অমৃত সায়রে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল’। আওয়ামী লীগের হয়েছে সে অবস'া। যতগুলো উদ্দেশ্যে তারা বিএনপির সমাবেশ বানচাল করতে চেয়েছিল তার প্রত্যেকটিরই হয়েছে উল্টো ফল। প্রকৃত প্রস্তাবে মাইক্রোফোনের অসুবিধা সত্ত্বেও খালেদা জিয়ার সমাবেশ আশাতিরিক্ত সফল হয়েছে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা আমাকে বলেছেন, প্রায় তিন লাখ লোক সমাবেশে এসেছিলেন, সভা শুরু হওয়ার অনেক আগেই পুলিশের নির্দিষ্ট সীমানা ছাড়িয়ে বহু দূরে ছড়িয়ে পড়েছিল সমাবেশ।
খালেদা জিয়ার চারটি রোডমার্চ, বহু পথসভা ও জনসভা এবং আরো পরে বিভিন্ন জেলায় তার জনসমাবেশে কোথাও অশান্তি হয়নি। সোমবারও বিএনপি ও বিরোধী ১৬ দলের জোটের জোট থেকে কোথাও অশান্তি ঘটেনি। কিছু অশান্তি ঘটিয়েছিল ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডারেরা। তারা সমাবেশমুখী ছোটখাটো দলের ওপর হামলা করেছে। শেখ হাসিনার এই বরপুত্রদেরই আবার সরকার পুলিশের ভূমিকায় ব্যবহার করেছে। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে লোকজনকে যানবাহন থেকে নামিয়ে এনেছে, তাদের দেহতল্লাশি করেছে।
বাক ও সংবাদের স্বাধীনতা হত্যা
লাখ পাউন্ড ব্যয়ে বিদেশে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে হাসিনা সরকার দাবি করেছে, বাংলাদেশে বাক ও সংবাদের স্বাধীনতা আদর্শস'ানীয়। কিন' এতকাল বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে অন্য ছবি। বিরোধী দলকে তারা সভা-সমিতি করতে দিতে নারাজ। সাংবাদিকদের ওপর বহু নির্যাতন হয়েছে। প্রায় এক ডজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বর্তমান সরকারের আমলে। খুনিরা অবশ্যই শাসক দলের কাছের মানুষ। নইলে এরা অবশ্যই ধরা পড়ত। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং রুনি-সাগর দম্পতির হত্যা তদন্তের ভার নিয়েছেন, সে কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অন্য হাজারো ব্যর্থতার মতো এখানেও প্রধানমন্ত্রী চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। খুনিরা ধরা পড়েনি। শোনা যাচ্ছে, দুই খুনিকে নিরাপদে আমেরিকায় চলে যেতে দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার সমাবেশের সরাসরি লাইভ সম্প্রচারের মধ্যেই একুশে টেলিভিশন, বাংলাভিশন ও ইসলামী টেলিভিশন চ্যানেল তিনটির সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বল্পবুদ্ধি নেতারা হয়তো নিজেদের ‘সাফল্যে’ বগল বাজাচ্ছেন। কিন' তারা ভুলে গেছেন যে, এই তিনটি চ্যানেলের লাখ লাখ দর্শক শা...বা... বলে সরকারকে গালি দিচ্ছেন, মনে মনে আওয়ামী লীগ নেতাদের মুণ্ডু চিবোচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষক দেশ ভারত ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি প্রীত হওয়ার মতো নয়। সোমবারের সমাবেশ সম্বন্ধে বিদেশী মিডিয়ার বিবরণ সে ভাবমূর্তিতে আরো কয়েক পোঁচ কালি লেপে দিয়েছে। লজ্জা-শরম বলে যদি কোনো কিছু এ সরকারের থেকে থাকে, তাহলে তাদের উচিত লম্বকর্ণ বিশিষ্ট একটি চতুষ্পদ জীবের মতো চিৎকার না করে সুস' মস্তিষ্কে বিএনপির ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচিতে নিজেদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা। খালেদা জিয়া ২৯ মার্চ হরতাল ডেকেছেন, তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার ঘোষণা না দিলে ১১ জুন আবার ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি মেনে নিলে নিজেদেরও অনেক কল্যাণ করবে।
(লন্ডন, ১৩.০৩.১২)
serajurrahman@btinternet.com